ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের জীবনে ঈদ আসে। ধনী-গরীব সবার মধ্যে ঈদের আনন্দ জেগে ওঠে। ঈদের কথা মনে পরতেই মনের মধ্যে আনন্দের জোয়ার এসে যায়। ছেলেবেলা থেকেই আমরা জানি ঈদ সবার জন্য। ঈদ এলে সবার নতুন-নতুন জামা- কাপড় বানানো, মজার মজার খাবার তৈরি করা, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কত আনন্দ, কত মজা, কত উল্লাস, কত খুশি। তার কোন শেষ নেই। অথচ বর্তমানে এরই মধ্যে কত ব্যতিক্রম! বর্তমানে ঈদ শুধু ধনীদের জন্য। ধনীরাই একমাত্র ঈদের আনন্দটাকে উপভোগ করতে পারে। গরীবদের জন্য শুধুমাত্র নামে ঈদ। ঈদের আনন্দ উপভোগ করার ক্ষমতা তাদের নেই। বর্তমানে আমাদের সমাজে এমন কিছু পরিবারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যেটা শুধুমাত্র চোখে পরার মত, কিন্তু মুখে বলার মত সাহস, মনমানসিকতা, ইচ্ছা কোনটাই কারও নেই। যেমন আমাদের সমাজে এমন কিছু উচ্চবিত্ত পরিবার আছে যা কেবলমাত্র নিজেদের বিলাসিতার জন্য লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে। অথচ তার হাতের কাছে, তারই পাশে এমন এক পরিবার আছে, যারা লক্ষ টাকা তো দুরের কথা একশ টাকা খরচ করতে পারেনা । এমনও অনেক পরিবার আছে যারা ঈদ উপলক্ষে নিজেদের বিলাসিতার জন্য তো করেই, এমনকি ঘরের আসবাবপত্রও পরিবর্তন করে। ঘর সাজাতে দামি দামি অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফুলের টপ, ফুলদানি ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিসপত্র কিনে থাকে। কিন্তু তারই পাশে বসবাসরত এমন পরিবার আছে যারা পঞ্চাশ টাকা দিয়ে নিজেদের সন্তানের জন্য একটা জামা কিনার ক্ষমতা তাদের নেই। কেন এই তফাৎ আমাদের সমাজে? অথচ এই যে তফাৎ , এটাকে আমরা কেবল ফুটিয়ে তুলতে পারি সবার সামনে। কিন্তু তফাৎটাকে ভেঙে ফেলতে পারিনা। বর্তমানে দেখা যায় গরীবের এই কষ্টটাকে উপহাস করা হচ্ছে। যেমন ঈদ উপলক্ষে টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান দিচ্ছে গরীবদের ঈদ নিয়ে। তারা কিভাবে ঈদ কাটালো সেটা ফুটিয়ে তুলছে ক্যামেরার মাধ্যমে সবার সামনে । আবার ক্যামেরার সামনেই গরীবদেরকে সহানুভুতি দেখাচ্ছে। যে উপস্থাপক বা উপস্থাপিকা উপস্থাপনা করছে, সে নিজে গরীব বাচ্চাটাকে দেখিয়ে আফসোস করছে। অথচ তার বিবেকে এতটুকু প্রশ্ন জাগেনি যে, তার পরনে হাজার টাকার দামে পোষাক। আর যাকে নিয়ে আফসোস করা হচ্ছে সে হয়ত বা খালি গায়ে, না হয়, সে ছেড়াঁ গেঞ্জি পরা। কেন? এই তফাৎ কেন? হাজার টাকার দামি পোষাক না পরে ওখান থেকে কিছু তাদের সাহায্য করি। আমরা ভেবেছি ক্যামেরার সামনে গরীবদের নিয়ে প্রতিবেদন দেখিয়ে তাদের প্রতি সহানুভুতি করছি। কিন্তু না, এতে সহানুভুতিটা প্রমান হয়না। প্রমান হয় বাংলাদেশের ধনীরা সার্থপর। তারা প্রমান করতে চায় তাদের মুখের মহানুভবতা। এটাকে কি মহানুভবতা বলে? না এটা কে উপহাস বলে। উপস্থাপক উপস্থাপিকারা উপস্থাপনা করে যাতে গরীবের এই দুঃখটা ধনীদের চোখে পড়ে। কিন্তু তারা জানেনা সম্পদের লোভে ধনীদের চোখে পর্দা পড়ে গেছে। তারা মুখ দিয়েই শুধু আফসোস করবে। তারা শুধুমাত্র মুখের ব্যবহার করবে, কিন্তু অন্তরের ব্যবহার করবে না। আমি সুদূরে যাবনা, আমি আমার বাংলাদেশের কথাই বলি। এই সমাজে কেউ কোটিপতি আবার কেউ শূন্যপতি, যাকে বলা হয় এক কথায় নিঃস্ব। কেন এত বড় উচ্চ তফাৎ? একজন কোটিপতির যদি মাসে দশ লক্ষ টাকা আয় হয়। এবং সে যদি ঐ টাকা থেকে তার একজন গরীব কর্মচারীকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়। তবে পরের দিন সেই গরীব কর্মচারী আর গরীব থাকবে না। আর শুধুমাত্র এই ব্যবস্থা সম্ভব হবে যাকাত প্রথা চালু করার মাধ্যমে।
Wednesday, October 15, 2008
ঈদ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment