Wednesday, September 24, 2008

অন্ধকার পৃথিবী

একা একা কিছু ভালো লাগে না যে আমার
মনে হয় পৃথিবীটা এক অন্ধকার ঘর
এখানে সাথি থাকে না, সঙ্গি থাকে না
লাগে না যে ভালো
খুঁজে দাও সাথি আমায়
এনে দাও আলো
সাথি ছাড়া থাকতে হবে আমি জানি
আলো ছাড়া অন্ধকারে
রব চিরদিনি
একা একা অন্ধকারে
বসে থাকি আমি
কেউ এসে বলে নাতো
অন্ধকারে কেন থাকো তুমি
কারণ- পৃথিবীটা এক অন্ধকার ঘর
এখানে সব আপন হয়ে যা পর
ভালোবেসে আমি সবাইকে টেনে আনি কাছে
সবাই আমায় পর ভেবে ঠেলে দেয় পাছে
হায়রে- এই পৃথিবীকে
যতই ভালোবাসো না
অন্ধকার পৃথিবী কোনদিন আলোকিত হবে না
সময় থাকতে সবাই
কররে মন শক্ত
এই পৃথিবীতে কাউকে করোনা ভক্ত
পৃথিবীটা আমাদের সঙ্গে করে খেলা
তার পিছে পরে তোমরা
সময়কে করোনা অবহেলা

যখন সন্ধ্যা নামে

র্কমক্লান্ত দিবসের অবসানে এ সময় আসে
রাত্রে অবসর যাপনের জন্য এ সময় আসে,
দিনের আলোর মৃত্যু হয়
সূর্য্য আর গগণ সীমায় অবস্থান করবে না
হয়ে যাবে তখনি অন্ধকার
সে সময়টা যখন সন্ধ্যা নামে
সূয্যের মুখ রক্তিম হচ্ছে
আকাশ রঙের খেলা খেলছে
তারগাছের উচুঁ পাতাগুলো সূর্য্যের রশ্মিতে জ্বলছে
রাত্রির অন্ধকার নেমে আসছে
জগতের র্কমকোলাহল সতব্ধতা হয়েছে
সেই সময়টা যখন সন্ধ্যা নামে
লাল আকাশের রক্ত ধীরে ধীরে বদলে যায়
মেঘের মাথায় সূর্য্য তার শেষ রং মাখিয়ে দেয়
মেঘেফাঁকে ফাঁকে নীল আকাশ উঁকি দেয়
ধীরে ধীরে লালের রেখা মিলিয়ে যায়
তার পর এক এক করে তারা গুলো ফুঁটে ওঠে
সেই সময়টা যখন সন্ধ্যা নামে
শহরে আমরা এ অন্ধকার খুঁজে পাই না
আসার আগে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলে ওঠে
গ্রামের তারাগুলোর দিকে তাকালে
মনে হয় মিথ্যা শহরের এই আলোকস্বজ্জা
এটা যে কত মধুর তা বোঝা বড় দায়
সেই সময়টা যখন সন্ধ্যা নামে

রত্নের ঘাটতি

মা অসুস্থ মাকে দেখতে দেশের বাড়িতে রওনা হলামবাড়িতে যেতে যেতে তা প্রায় সন্ধ্যাকিন্তু প্রচন্ড বৃষ্টি থেকে বের হওয়ার কোন পথ নাইমা আমাকে দেখে অনেকটা সুস্থ হয়ে গেলোপরের দিন সকালে কানে ভেসে এল, আমাদের গ্রামে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেতার নাম জাহাঙ্গীর চৌধুরীডাক্তার তাকে মাত্র পাঁচদিনের সময় দিয়েছেশুনে মনটা কেঁদে উঠলভালো মানুষেরা এ জগতে বেশিদিন থাকতে পারেনাকেন যে তারা অকালে চলে যায় তা বুঝতে পারি নাকিছুদিন আগে তার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেনপরের দিন বিকালে শুনলাম জাহাঙ্গীর চৌধুরী মারা গেছেনতারা চার ভাই পাচঁ বোনবাবা অনেক আগেই মারা গেছেনমা বেচেঁ আছেনচার ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই মারা গেছেন এবং পাচঁ বোনের মধ্যে দুই বোন মারা গেছেনতারা প্রত্যেকেই এক একটি দেশের রত্নগতকাল যিনি মারা গেলেন, তিনি ছিলেন ভাইদের মধ্যে মেজতিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ীতার একটি মাত্র ছেলেছেলেটি চিটাগাং ভার্সিটিতে পড়েপৃথিবীর সবচেয়ে আপন যে মা-বাবা, তারা তাকে আজ ছেড়ে চলে গেছেপৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় আজ এই ছেলেটিকয়েক বছর আগে জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বড় ভাই এবং ছোট ভাই মারা গেছেপ্রথমে যিনি মারা গেছেন, তার নাম আলমগীর চৌধুরীতিনি অজান্তে খুলনা জেলার কুখ্যাত সন্ত্রাস (আইনানুযায়ী যার ফাঁসি হয়েছিল) সেই এরশাদ শিকদারের সাথে ব্যবসা করতেনবিশাল ব্যবসায়ী ছিলেন আলমগীর চৌধুরীযখন জনতে পারলেন, এরশাদ শিকদার একজন সন্ত্রাসতখন তিনি এরশাদ শিকদারের সাথে ব্যবসা করতে অমত করলে, তাকে খুন করে ফেলে এরশাদ শিকদার, তার খামারের মাগুর মাছ দিয়ে খাইয়ে দেয়আর এভাবেই শুরু হয় সন্তান হারা মায়ের বুক খালি হওয়া

তার বড় ছেলে
হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেনতার নাম ছিল তৈয়মুরতিনি ছিলেন একজন পুলিশের এস.পিসে যখন চাকরীরত ছিলেন, তখন তার কাছে নাকি তার ছোট ভাইয়ের হত্যার মামলার কেস হাতে এসে পরেতখনও তিনি জানতেন না যে এই ফাইলটি তার ছোট ভাইয়ের হত্যার ফাইলসে যাতে এই কেসটি হাতে না নেয় এ জন্য তাকে দুই লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে চাইলে সে অমত করেতারপর তাকে খাগড়াছড়ি পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়এমনকি তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়তখন সে নিজের জীবনের ভয়ে টাকা নিতে রাজি হয়তখন হঠাৎ তাকে সিলেট বদলী করে দেয়যখন সে সিলেট যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়, তখন তারই থানার এক হাবিলদার তাকে জানায় - স্যার আপনি যে ফাইলটার জন্য টাকা নিয়েছেন? দয়া করে ফাইলটা খুলে দেখেন, কার ফাইলতখন এস.পি. সাহেব ফাইলটা খুলে দেখলেন যে তার ছোট ভাইয়ের হত্যার ফাইলসে চুপ থাকলেনকোন কথা না বলে সিলেট রওনা দিলেনগাড়ির মধ্যে ভাবতে ভাবতে র্হাট এ্যাটাক করলেনতাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার পর দুইদিন পর তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেনতাদের পাচঁবোনের মধ্যে দুই বোন মারা গেছেনতারাও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেনএখন বর্তমানে এক ভাই ও তিন বোন বেচেঁ আছেনতিন বোনের মধ্যে এক বোন আমাদের মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানারশ্রীপুর ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসরআর ছোট ভাইটা বর্তমানে বাংলাদেশের একজন সচিবতার পুরো ভাল নামটা আমার জানা নেইতবে তার ডাক নাম মিঠুবাকি দুই বোন স্বামীর সংসারে সুখেই আছেকিন্তু মা কেমন আছে? হতভাগী মা রত্নের জন্ম দিয়েই গেলো, কিন্তু বুকে আগলে ধরে রাখতে পারলো নান্তানহারা যন্ত্রনা বুকে নিয়ে আজও বেঁচে আছেতার চোখের পানি শুকিয়ে গেছেএকটা মা কত কাদঁতে পারে? একটা মা কত কষ্ট সহ্য করতে পারে? সে এখন শুধু মৃত্যুর অপেক্ষায় আছেজানিনা তার ভাগ্যে এই শেষ চার রত্নের হাতে মাটি আছে কিনাযেহেতু সে আগের রত্ন গুলো ধরে রাখতে পারেনি, সেহেতু এই শেষ রত্নগুলো কি ধরে রাখতে পারবে? ...